বিভিন্ন প্রকার বোমা সম্পর্কে

Many kinds of Bomb

সম্মানিত আসসালামুয়ালাইকুম,
আশা করি সকলে আল্লাহ্ রহমতে ভাল আছেন।আজকের পোস্ট টি পড়ার মাধ্যমে আমরা বোমা তৈরী ও আবিষ্কার সম্পর্কে জানতে পারবো।
প্রথমে আমরা বোমার ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নেই।গ্রিক শব্দ বোম্বাস থেকে বোমা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে।বোমা হলো এক ধরনের বিস্ফোরক অস্ত্রবিশেষ যার মাধ্যমে কোথাও বিস্ফোরণ করা হয় ।বোমার ভিতরে রাসায়নিক পদার্থ বিক্রিয়ার ফলে বড় ধরনের কম্পন তরঙ্গ সৃষ্টি করার মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।১২২১ সালে চীনে প্রথম বোমার ব্যবহার লক্ষ্য করা হয়।১১ শতকের চীনে বাস টিউব বোমার ব্যবহার দেখা গিয়েছিল। ১৩ শতকে বারুদ দিয়ে তৈরি বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল। কয়েক শতাব্দী ধরেই পুরো বিশ্বে বোমার ব্যবহার শুরু হয়।এখন আমরা বিভিন্ন প্রকার বোমার আবিষ্কার ব্যবহার ও তার ইতিহাস সম্পর্কে জানব।

পারমানবিক বোমা :

পারমাণবিক মারণাস্ত্র এর ক্ষেত্রে পারমানবিক বোমা অন্যতম।এটি দ্রুত নিউট্রনের সুশৃংখল বিক্রিয়ার দ্বারা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে থাকে।এতে ইউরেনিয়াম 235 এবং প্লুটোনিয়াম 239 ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি এটম বোমা নামে পরিচিত। এতে নিউক্লিয়ার বোমা ফিউশন প্রক্রিয়া বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।আজ পর্যন্ত দুইটি পারমানবিক বোমা ব্যবহার করা হয়েছে তা হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে।পারমানবিক বোমা ব্যবহারের ফলে প্রচুর ক্ষতি সাধিত হয়ে থাকে।পারমানবিক বোমা ব্যবহারের ফলে কোন স্থানের মাটির উর্বরতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।পারমাণবিক বোমার জনক হলেন রবার্ট ওপেন হাইমার যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

হাইড্রোজেন বোমা:

বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় মৌল সংমিশ্রণে তৈরি করা হয় হাইড্রোজেন বোমা, একটি হাইড্রোজেন বোমা অন্যান্য সাধারণ ।পরমাণু বোমার চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী ও ধ্বংস করে থাকে।একটি হাইড্রোজেন বোমার ক্ষমতা 6 থেকে 8 মাত্রার ভূমিকম্পের সমান হয়ে থাকে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শীতল যুদ্ধের সময় হাইড্রোজেন বোমা আবিষ্কার করা হয়েছিল।পরমাণু আর হাইড্রোজেন দুটি আলাদা আলাদাভাবে তৈরি করা হয়। হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করতে দুই বা ততোধিক হাইড্রোজেন পরমাণু ক্ষেত্রে অনেক বড় হাইড্রোজেন পরমাণু তৈরি করা হয়। হাইড্রোজেন পরমাণুর নিউক্লিয়ার ফিশন এর তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়।হাইড্রোজেন বোমার জনক হল এডওয়ার্ড টেলার। সূর্য যে প্রক্রিয়ায় শক্তির উৎপাদন করে থাকে হাইড্রোজেন বোমা বিস্ফোরণের সময় ঠিক একই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়।

নিউট্রন বোমা:

অন্যান্য বোমা তুলনায় নিউট্রন বোমার প্রযুক্তি কোন অস্ত্র হিসেবে ধরা হয়। এর মাধ্যমে অন্যান্য ভবন দালানকোঠা ধ্বংসের চেয়ে মানুষ হত্যা করা সম্ভব হয়।এর জনক হল স্যামুয়েল কি কোহেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এটাই স্বাভাবিকভাবে সচরাচর জীবিত কোষ সমূহ ধ্বংস করে থাকে ফলে যুদ্ধের ময়দানে শুধু যোদ্ধারাই ধ্বংস হয়ে যায়।সারা বিশ্বের অনেক চাহিদা রয়েছে।

গুচ্ছ বোমা:

গুচ্ছ বোমা এমন এক ধরনের বিস্ফোরক যার মাধ্যমে ছোট ছোট সাবমেরিন কে ধ্বংস করা হয়।এর মাধ্যমে সারা জৈবিক অস্ত্র ছড়িয়ে দেওয়া হয় ল্যান্ডমাইন ধ্বংস করতেই বোমা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।যানবাহন ও বিভিন্ন প্রকার পরিকাঠামো ও ধ্বংসের পাশাপাশি এই বোমার মাধ্যমে মানুষ হত্যা করা সম্ভব হয়।সারাবিশ্বেই এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

নাপাম বোমা:

ন্যাপথা নিক এসিড ও পামিটিক এসিডের মিশ্রণে নাপাম বোমা তৈরি করা হয়।এদুটি এসিড মিশ্রণ জেলির মত পদার্থ তৈরি করে যা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ।এই জেলির সাথে পেট্রোল বা গ্যাসোলিনের মিশিয়ে এক ধরনের পদার্থ তৈরি করা হয়। এর সাথে বিস্ফোরক মিশিয়ে নাপাম বোমা আবিষ্কার করা হয়।জ্বলন্ত এই নাপাম বোমা মানুষের গায়ের নিক্ষেপ করলে যতক্ষণ পর্যন্ত বিস্ফোরক টি ফুরফুরে শেষ হয়ে না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষের চামড়া পুড়ে খসে যায়।এটি খুবই ভয়াবহ একটি বোমা কৃতি। 1942 ইংরেজি সালে এ বোমা প্রথম আবিষ্কার করা হয়।এটি আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ম অনুসারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

অন্যান্য বোমা:

এছাড়াও অনেক শক্তিশালী বোমা মধ্যে রয়েছে মাদার অফ অল বমস এবং ফাদার অফ অল বম্বস।মাদার অফ অল বম্বসর দাম প্রতিটি এক কোটি 28 লক্ষ ইউরো।মাদার অব অল বমস এর ধ্বংস ক্ষমতা একশত পঞ্চাশ থেকে 300 মিটার। অন্যদিকে ফাদার অফ অল বম্বসর ধ্বংসক্ষমতার 300 মিটার।মাদার অব অল বম্ব এর তুলনায় ফাদার অফ অল বোম্বের ধ্বংস ক্ষমতা দ্বিগুণ পরিমাণ হয়ে থাকে।এদুটি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম দুটি ভয়াবহ বোমা।

বোমা বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতি:

বিস্ফোরণের সময় মানুষ যদি আত্মরক্ষার উপকরণ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে তারা তেমন পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। কিন্তু সাধারণত আত্মরক্ষার উপকরণ ছাড়া বোমা বিস্ফোরণের কাছাকাছি থাকলে তাহলে তারা বিভিন্ন প্রকার শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারেন।বোমা বিস্ফোরণ এর সময়ে যদি আত্মরক্ষার উপকরণ ছাড়াই বোমা বিস্ফোরণ করানো হয় তাহলে অনেক ক্ষতি সাধন সহ এমনকি মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। তাই বোমা বিস্ফোরণের সময় সচেতনতা অবলম্বন করা অধিক জরুরী।
সকল পাঠকগনকে এতক্ষন সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।ধন্যবাদ সকলকে।